ত্রিপুরা
img

গ্রেফতার দুই উগ্রপন্থী, উদ্ধার প্রচুর বিস্ফোরক

১৫ আগস্ট,  স্বাধীনতা দিবস। আর এই স্বাধীনতা দিবসের আগের দিন সন্ধ্যা রাতে উত্তর জেলা পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী এক আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে এক উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন করল। গোপন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ভাঙমুন থানার পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী যৌথভাবে ভাঙমুন নাকা গেট এলাকায় তল্লাশি অভিযান চালিয়ে আটক করে নবগঠিত উগ্রবাদী সংগঠন ত্রিপুরা ইউনাইটেড ন্যাশনাল ফ্রন্টের দুই সক্রিয় সদস্যকে। ধৃতরা হল ধহনজয় রিয়াং (৩৯), সে আসামের হাইলাকান্দি জেলার বাসিন্দা এবং অপরজন  সদাই ননদ রিয়াঙ (৩৪), সে ত্রিপুরার কাসকাউপাড়া, থানা দামছড়ার বাসিন্দা। উত্তর জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ধৃত দুইজনই দীর্ঘদিন ধরে পুলিশের নজরে ছিল এবং সীমান্ত এলাকা দিয়ে নাশকতামূলক কার্যকলাপের পরিকল্পনা করছিল। অভিযানের সময় পুলিশ তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করে —ইলেকট্রিক ডিটোনেটরবিস্ফোরক সামগ্রী, ধারালো চাকু সংগঠনের লেটার প্যাড ও গুরুত্বপূর্ণ নথি, সন্দেহজনক ডায়েরি একটি টর্চ এবং অন্যান্য বিপজ্জনক সরঞ্জাম প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, স্বাধীনতা দিবসকে ঘিরে ত্রিপুরা রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে অশান্তি সৃষ্টি ও নাশকতার পরিকল্পনা করছিল এই দুই অভিযুক্ত। জেলা পুলিশ সুপার অভিনাশ রাই  জানান, “১৫ই আগস্টের আগে যেকোনও ধরনের নাশকতা রুখতে আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় ছিলাম। ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া সামগ্রী অত্যন্ত বিপজ্জনক এবং নাশকতায় ব্যবহারের উপযোগী। এরা কি কোনও বড় ষড়যন্ত্রের অংশ ছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”এই অভিযানে নেতৃত্ব দেন পানিসাগর মহকুমার পুলিশ আধিকারিক সৌম্য দেববর্মা এবং কাঞ্চনপুর মহকুমার পুলিশ আধিকারিক। গোটা অভিযানে ভাঙমুন থানার ওসি এবং জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে এক বিশেষ ত্রিপুরা পুলিশের টিম গঠন করা হয়েছিল। দীর্ঘ প্রস্তুতি ও কৌশলগত নজরদারির পর অবশেষে ভাঙমুন নাকা গেটে বিশেষ চেকপোস্ট বসিয়ে ধৃতদের গ্রেপ্তার সম্ভব হয়।এ মুহূর্তে ধৃতদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ চলছে এবং তাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে অন্যান্য সম্ভাব্য সহযোগীদের খোঁজে তল্লাশি অব্যাহত রয়েছে। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে উত্তর জেলা ও সীমান্ত এলাকায় অতিরিক্ত চেকপোস্ট বসানো হয়েছে এবং টহলদারি আরও জোরদার করা হয়েছে, যাতে কোনওভাবেই শান্তি-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত না হয়। এই সাফল্য উত্তর জেলার মানুষের মনে যেমন স্বস্তি ও নিরাপত্তার অনুভূতি ফিরিয়ে এনেছে, তেমনি আবারও প্রমাণ করেছে যে, সীমান্তবর্তী এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার না করলে উগ্রবাদী কার্যকলাপের ঝুঁকি থেকেই যায়। পুলিশের তৎপরতা ও পেশাদারিত্বের জন্য সমগ্র উত্তর জেলা পুলিশ বাহিনীকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ।