
গ্রেটার তিপরা ল্যান্ড, ও তিপরাসা একর্ড বাস্তবায়ন কিংবা রোমান হরফে ককবরক লিপির দাবি এখন তিপরা মথার কাছে মুখ্য নয়। জনজাতি অংশের মানুষজনকে আবারও বিভ্রান্ত করে নিজেদের উপর সাধারণ জনজাতিদের বিশ্বাস ফিরিয়ে আনার আপ্রাণ অভিসন্ধিতে এবার অনুপ্রবেশ ইস্যুতে নতুন তাস ফেলতে শুরু করেছে মথা। এই ইস্যুকে সামনে রেখে মথা এবার কেন্দ্রের কাছে জোরালো দাবি রাখতে ৭ জুলাই গোটা আগরতলা শহরে প্রতিবাদ র্যালি করবে বলে ঘোষণা দিল। এই রেলিতে যোগ দেবেন প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মা। কিন্তু এক অদ্ভুত ঘোষণা এদিন সাংবাদিক বৈঠকে দিলেন রঞ্জিতবাবু। সাংবাদিক বৈঠকে এই র্যালির প্রেক্ষাপট নিয়ে বিশদে আলোচনা করতে গিয়ে বিধায়ক রঞ্জিত দেববর্মা সাংবাদিক সম্মেলনে পরিষ্কার জানালেন, ৭ জুলাই যে র্যালি অনুষ্ঠিত হবে সেটা হবে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক। এক্ষেত্রে প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে এই মিছিলে অংশগ্রহণ করবেন। কেন এই মিছিলটি অরাজনৈতিক হবে তার ব্যাখ্যায় বিধায়ক রঞ্জিত দেববর্মার দাবি, অনুপ্রবেশ ইস্যুতে রাজ্যের সমস্ত অংশের মানুষ সরকারের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ। এক্ষেত্রে এই বিক্ষোভ মিছিলে যাতে রাজ্যের স্থায়ী বসবাসকারীরা ধর্ম, বর্ণ, রাজনৈতিক দলমত নির্বিশেষে অংশগ্রহণ করতে পারেন তাই ও রাজনৈতিক প্লাটফর্ম থেকে এই র্যালির আহ্বান করা হয়েছে। এদিন সাংবাদিক বৈঠকের রঞ্জিত দেববর্মা আরও বলেন, বিজেপির শরিক হওয়ার পরও তিপরাসাদের উন্নয়নের জন্য রাজ্য সরকার কিছুই করার উদ্যোগ নেয়নি। তাই শাসক জোটে সাইনবোর্ড সর্বস্ব শরিক হয়ে থাকার আর কোন মানে হয় না। এক্ষেত্রে জোট থেকে তিপরা মথা বেরিয়ে যাবে বলে হুঁশিয়ারি দিলেন বিধায়ক রঞ্জিত দেববর্মা। অনুপ্রবেশ ইস্যু এবং সাত জুলাইয়ের র্যালি সম্পর্কে তিনি জানান, মিনিস্ট্রি অফ অ্যাফেয়ার্স থেকে যে নোটিফিকেশন এসেছিল সেটি কার্যকরী করার জন্য কোন উদ্যোগ নেয়নি রাজ্য সরকার। যার ফলে অনুপ্রবেশ নিয়ে অরাজনৈতিকভাবে একটা বড় মুভমেন্টের প্রয়োজন। তাই সাত জুলাইয়ের আহুত র্যালিতে বুবাগ্রা হিসেবে প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মা অংশগ্রহণ করবেন। রঞ্জিত দেববর্মা বলেন, মিনিস্ট্রি অফ হোম অ্যাফেয়ার্স থেকে নোটিফিকেশনটি বেরোবার পর, এ রাজ্যে কেন নোটিফিকেশনটি কার্যকরী করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না তা তিপরা মথার বোধগম্য হচ্ছে না। কিন্তু এই নোটিফিকেশন অনুযায়ী মহারাষ্ট্র, গুজরাট, দিল্লি , হরিয়ানা, এবং উত্তর পূর্বাঞ্চলের আসামেও অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ডিটেনশন ক্যাম্পে অনুপ্রবেশকারীদের পাঠানোর ব্যবস্থা হয়েছে। স্পেশাল টাস্ক ফোর্স তামিলনাড়ুতেও গঠন হয়েছে। কিন্তু ত্রিপুরায় অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে এখন পর্যন্ত কোন উদ্যোগ নেই। রাজ্যের কোন জেলাতে ডিটেনশন ক্যাম্প হয়নি, স্পেশাল টাস্ক ফোর্স গঠন করা হয়নি। অনুপ্রবেশকারীদের এখানে শুধু ধরা হচ্ছে এরপর কোর্টে পাঠানো হচ্ছে এরপর তাদের হয়তো পুশ ব্যাক করা হচ্ছে, অনুপ্রবেশ ইস্যুতে এর বাইরে রাজ্য সরকারের কোন একটিভিটিজ নেই। সাংবাদিক বৈঠকে এদিন বিস্ফোরক দাবী করলেন রঞ্জিত দেববর্মা। তার দাবি অনুযায়ী শরিক জোট থাকে সরে যাবে মথা। তার জন্য মথার বিধায়করা সবাই প্রস্তুত। এমনকি সাংসদ কৃতি সিং দেববর্মাও ভারতীয় জনতা পার্টির উপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করতে প্রস্তুত রয়েছেন বলে জানালেন রঞ্জিতবাবু। এক্ষেত্রে তার দাবি রাজ্যের জনজাতিদের উন্নয়নের জন্যই মথা সরকারে যোগ দিয়েছিল। কিন্তু তিপরা মথা সরকারি যোগ দিলেও না থাকে কোন গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। জনজাতিদের উন্নয়নের জন্য তিপরাসা একর্ড বাস্তবায়ন হয়নি। বিভিন্ন অজুহাতে এই চুক্ত বাস্তবায়ন করছে না সরকার। তাছাড়া মন্ত্রিসভায় মথার তিনজনকে স্থান দেওয়ার কথা থাকলেও দুজনকে স্থান দেওয়া হয়েছে এর মধ্যে আবার একজন প্রতিমন্ত্রী। বিভিন্নভাবে পর্যদস্ত পর্যুদস্ত করা হচ্ছে তিপরা মথাকে। এক্ষেত্রে জনজাতিদের উন্নয়নের জন্য যদি কোন কাজ না করা যায় তাহলে সরকারি থেকে কি লাভ প্রশ্ন তুললেন বিধায়ক রঞ্জিত দেববর্মা। পাশাপাশি তিনি জানালেন খুব শীঘ্রই হয়তো সরকার থেকে সমর্থনে প্রত্যাহারের ঘোষণা দেবে মথা। এ ব্যাপারে দিল্লিতে শেষবারের মতো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সাথে আলোচনা করা হবে। আলোচনা ফলপ্রসূ না হলে আগামী ২০ জুলাইয়ের মধ্যে তিপরা মথা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বলা জানালেন বিধায়ক রঞ্জিত দেববর্মা।