
রাজ্যের জনগণকে উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানে রাজ্য সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। সেই লক্ষ্যে রাজ্যের প্রতিটি মহকুমা, জেলাস্তরে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য পরিকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে রাজাকে আগামীদিনে স্বাস্থ্য হাব হিসেবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার আগরতলার প্রজ্ঞাভবনে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তর আয়োজিত জাতীয় চিকিৎসক দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে একথা বললেন মুখামন্ত্রী ডক্টর মানিক সাহা।রাজ্যের জনগণকে উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানে রাজ্য সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ।এবারের জাতীয় চিকিৎসক দিবসের মূলভাবনা হচ্ছে 'বিহাইন্ড দ্য মাস্ক কেয়ারিং ফর কেয়ারগিভার্স। প্রজ্ঞা ভবনে জাতীয় চিকিৎসক দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে বললেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন প্রজ্ঞা ভবনে মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে উদ্বোধন হয় জাতীয় চিকিৎসক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের।অনুষ্ঠানের শুরুতে মুখ্যমন্ত্রী সহ অতিথিগণ ডা বিধানচন্দ্র রায়ের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান।অনুষ্ঠানে বিধানচন্দ্র রায়ের স্মৃতিচারণ করে মুখ্যমন্ত্রী ডক্টর মানিক সাহা বলেন, আজকের এই দিনটি কিংবদন্তি ডাক্তার বিধানচন্দ্র রায়ের জন্ম ও মৃত্যু দিবস। এই দিনটি চিকিৎসকদের জন্য একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ দিন। ডাক্তার বিধানচন্দ্র রায় চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি রাজনৈতিক সহ সমাজের নানা ক্ষেত্রে সেবা করে গেছেন। তিনি ছিলেন আধুনিক পশ্চিমবঙ্গের রূপকার। সমাজের প্রতি তার দায়বদ্ধতা থেকে শিক্ষা নিয়ে বর্তমানের চিকিৎসক সমাজকে পরিষেবা প্রদানের জন্য মুখামন্ত্রী আহ্বান জানান। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা আজ উন্নয়নের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। রাজ্যে বর্তমানে কিডনি ট্রান্সপ্ল্যান্টের মতো জটিল অস্ত্রোপচার হচ্ছে। লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট পরিষেবা প্রদানেরও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। একজন ডাক্তার সবসময়ই মানুষকে সুস্থ করে তোলার জন্য প্রচেষ্টা করে থাকে। তাই চিকিৎসা পরিষেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষের উচিত চিকিৎসকদের প্রতি বিশ্বাস ও সম্মান প্রদর্শন করা। সেই রূপ চিকিৎসকেরও রোগীদের সাথে সংবেদনশীল মনোভাব নিয়ে সুসম্পর্ক গড়ে তোলা প্রয়োজন। তবেই আজকের দিবসের এই মূল ভাবনার স্বার্থকতা আসবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জিবি হাসপাতালে আসা রোগীর সহযোগীদের ১০ টাকার বিনিময়ে খাওয়ার প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, রাজ্যে প্রতিভার অভাব নেই। রাজ্যে সরকারি ও বেসরকারি স্তরে মেডিক্যাল কলেজের ৪০০টি আসন রয়েছে। তাছাড়াও রাজ্যে ৫০ আসনবিশিষ্ট নার্সিং কলেজ, ৬৩ আসন বিশিষ্ট ডেন্টাল কলেজ স্থাপন করা হয়েছে। বর্তমানে রাজোর গোমতী, ধলাই ও দক্ষিণ জেলায় ট্রমা সেন্টার চালু করা হয়েছে।স্বাস্থ্য পরিষেবায় বিভিন্ন প্রকল্পের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনায় রাজ্যে ১৫ লক্ষের উপর মানুষ আয়ুষ্মান কার্ড পেয়েছেন এবং তাতে ২৩৯ কোটি টাকা সহায়তা পেয়ে মানুষ উপকৃত হয়েছেন। একইভাবে মুখ্যমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনায় মানুষ ১৭ কোটি টাকার সহায়তা পেয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পিএম. ডিভাইন প্রকল্পে আগরতলা ডেন্টাল কলেজের জন্য ২০২ কোটি, জিবি হাসপাতালে ২০০ শয্যাবিশিষ্ট মা ও শিশু স্বাস্থ্য বিভাগ স্থাপনে ১৯২ কোটি টাকা, বিশ্রামগঞ্জে স্টেট লেভেল নেশামুক্তি কেন্দ্র স্থাপনে ১২১ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের চিকিৎসা পরিষেবায় বিশেষ অবদানের জন্য ১৫ জন চিকিৎসককে সংবর্ধনা জ্ঞাপন করেন। এছাড়া জাতীয় চিকিৎসক দিবস উপলক্ষ্যে একটি স্মরণিকার আবরণ উন্মোচন করেন।