নিজস্ব প্রতিনিধি:- রমেশের অসাধারণ জীবনযাত্রার গল্প । রমেশের জীবন কাহিনীটা যেন এক সিনেমার চিত্রনাট্যের মত। যেখানে লড়াই ও অধ্যাবসায় সাফল্যের মিশ্রণ। বেঙ্গালুরুর এক সাধারণ পরিবারে জন্ম রমেশের। রমেশের বাবা পি গোপাল তিনি নিজেই ছিলেন একজন নাপিত। কিন্তু রমেশ বাবুর বয়স যখন সাত তখনই তার জীবনে নেমে আসে অন্ধকার বাবার অকাল মৃত্যু ।পেছনে রয়ে যান মা আর তার বাবার ছোট্ট একটি সেলুন ।দরিদ্রের সাথে তীব্র সংগ্রাম রমেশের। মায়ের সংসারের অভাব থেকে মাত্র ১৪ বছর বয়স থেকেই নেমে পড়ে রোজি রোজগারে। সংবাদ পত্রিকা বিলি থেকে শুরু করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে দুধ বিক্রি করা, ছোটবেলা থেকেই কাজের মাধ্যমে নিজেকে গড়ে তোলার প্রবণতা তার। প্রথম মাসে মাত্র ১০০ টাকা আয় তবুও হাল ছাড়েনি রমেশ। ১৮ বছর বয়সে বাবার ঐতিহ্যবাহী সেলুনের দায়িত্ব কাধে তুলে নেন তিনি। সেলুনের কাজের প্রতি তার ছিল অগাধ আগ্রহ। একাগ্রতা , দক্ষতা ও আন্তরিকতার কারণে খুব শীঘ্রই জনপ্রিয়তা পেতে থাকেন তিনি। ভোর ছয়টা থেকে রাত দুইটা পর্যন্ত অভিরাম কাজ করতেন রমেশ। আর সেই কাজের প্রতি তার ভালোবাসা ।একজন সাধারন নাপিত থেকে পরিণত করে একজন শিল্পীতে। কিন্তু রমেশ শুধু সেলুনের চার দেওয়ালের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে চাননি তার মনের মধ্যে ছিল আরো বড় কিছু করার স্বপ্ন। ১৯৯৩ সালে আসে তার জীবনের লক্ষ্যের চাবিকাঠি। রিন করে কিনে একটি মারুতি গাড়ি। সেলুনের কাজের পাশাপাশি শুরু করেন ড্রাইভিং। এখানেও যেন তিনি খুঁজে পান সাফল্যের আরো একটি অংশ। ধীরে ধীরে আরো গাড়ি জোরু করে তিনি খুলে বসেন গাড়ির ব্যবসা। তার এই গাড়ির ব্যবসা দ্রুত গতিতে প্রসার লাভ করে এর ফলে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে ।কিছুদিনের মধ্যেই তিনি হয়ে উঠেন একজন সফল ব্যবসায়ী ।তার গ্যারেজ সাজিয়ে ওঠে রুলস রয়েজ ,বিএমডব্লিউ ,বেনটেলি ,ওডি ব্যবহারের মত বিলাসবহুল গাড়ি ।প্রায় ২৫ বছর পর রমেশবাবু গ্যারেজে রয়েছে ১২০ টি বিলাসবহুল গাড়ি যার মধ্যে রয়েছে রুলস রয়েজ bmw বেনটেলি ,ওডি, এর মত নামিদামি ব্র্যান্ডের গাড়ি।মজার ব্যাপার হলো ভারতীয় শীর্ষ ধনী মুকেশ আম্বানির কাছে সহস্রটি গাড়ি থাকলেও বিলাসবহুল গাড়ি আছে মাত্র দশটি। অন্যদিকে রমেশের ৪১৭টি গাড়ির মধ্যে ১২০টি গাড়ি রয়েছে বিলাসবহুল। বর্তমানে রমেশের গাড়ি ভাড়া কোম্পানিতে ৩০০ জন কর্মচারী কাজ করেন। তার গ্রাহক তালিকায় রয়েছে অমিতাভ বচ্চন ,আমির খান, সচিন তেন্ডুলকর এবং বিরাট কোহলির মত তারকারা ।কিন্তু এত সাফল্যের পরও রমেশ ভোলেনি তার মূল পরিচয়। আজও তিনি প্রতিদিন যান সেই সেলুনে। কারণ তার কাছে মানুষের চুল দাড়ি কেটেই তার জীবনের যাত্রা শুরু। তাইতো তিনি বলেন আমি আমার আসল পরিচয় কোনদিনও ভুলবো না আর সেলুন টিই আমার পরিচয় ।রমেশ বাবুর এই কাহিনী আমাদেরকে এই শিক্ষা দেয় যে পরিশ্রম আন্তরিকতা ও লক্ষ্যের প্রতি অবিচল থাকলে সাফল্য অবশ্যই আসবে।