বিনোদন
img

নায়িকা-সুরকারের পর ফেব্রুয়ারিতেই প্রয়াত ‘চৌরঙ্গী’র গীতিকার! চলে গেলেন মিল্টু ঘোষ।

নিজস্ব প্রতিনিধি:- বাঙালির লক্ষ্মীপুজো আজও অসম্পূর্ণ ‘এসো মা লক্ষ্মী বসো ঘরে’ এই গান ছাড়া। সেই গান বেরিয়ে এসেছিল বাংলা ছবির স্বর্ণযুগের গীতিকার মিল্টু ঘোষের কলম থেকে। অমল মুখোপাধ্যায়ের সুরে সেই গান গেয়েছিলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের। বৃহস্পতিবার চলে গেলেন মিল্টু ঘোষ। দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন শিল্পী। জানা গিয়েছে ২৯ সে সকাল ৯টা নাগাদ হাসপাতালে চিরঘুমে চলে যান মিল্টু ঘোষ। বয়স হয়েছিল প্রায় ৯০ বছর। আশ্চর্যজনকভাবে ২০২৪-এর ফেব্রুয়ারিতে অদ্ভূত সমাপতন। এই মাসে এক এক করে চলে গেলেন চৌরঙ্গী ছবির নায়িকা অঞ্জনা ভৌমিক, সুরকার-প্রযোজক অসীমা মুখোপাধ্যায় এবং গীতিকার মিল্টু ঘোষ। চৌরঙ্গী ছবির মান্না দে-র গাওয়া 'বড় একা লাগে' আজও গেঁথে রয়েছে বাঙালি শ্রোতাদের মনে। সেই গান লিখেছিলেন প্রয়াত গীতিকার। একে একে নিভছে বাংলা ছবির স্বর্ণযুগের প্রদীপ, অভিভাবকহীন হচ্ছে টলিউড। বাঙালির লক্ষ্মীপুজোর গান অতি প্রিয়, প্রাণের গান এবং চৌরঙ্গীর ‘বড় একা লাগে’ ছাড়াও মিল্টু ঘোষের কলম থেকে বেরোনো জনপ্রিয় গানের তালিকা দীর্ঘ। হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, মুকেশ, প্রতিমা মুখোপাধ্যায়, গীতা দত্ত, অমল মুখোপাধ্যায়ের মতো সঙ্গীতশিল্পীদের সঙ্গে মিল্টু ঘোষের যুগলবন্দি বাঙালিকে উপর দিয়েছে কিছু না ভোলা গান। হেমন্তর গাওয়া  অজানা শপথ ছবির ‘ও আকাশ সোনা সোনা’ কিংবা ‘জীবনের অনেকটা পথ’ শোনেনি এমন বাংলা ছবির দর্শক বিরল। গীতা দত্তর ‘কাজল কাজল কুমকুম’, মুকেশের গাওয়া ‘মন্দ বলে লোকে বলুক না’-র মতো অতি জনপ্রিয় গানের কথা লিখেছেন প্রয়াত শিল্পী। যৌথ পরিবারে বেড়ে ওঠা মিল্টু গীতিকার হতে চাননি। ছেলেবেলা থেকে কবিতা লেখা ছিল তাঁর নেশা। দারুণ ফুটবল খেলতেন। জানা যায়, এক গানের প্রতিযোগিতায় সুধীন দাশগুপ্তের সঙ্গে আলাপ হয় মিল্টু ঘোষের। তাঁকে বেশ কয়েকটি গান লিখেছিলেন গীতিকার। সুধীন দাশগুপ্তর পছন্দ হয়ে গেল, ‘কাজল কাজল কুমকুম শিউলি ঝরে’ গানটি। তবে ছবিতে গান লেখা ছিল মিল্টু ঘোষের প্যাশন, তিনি রাজ্য সরকারের পরিবহণ দফতরে কর্মরত ছিলেন। গৌরীপ্রসন্ন মজুমদার, পুলক বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্যামল গুপ্তর মতো গীতিকারদের ভিড়ে ষাটের দশকে টলিগঞ্জে নিজের জায়গা পাকা করেছিলেন মিল্টু ঘোষ। তাঁর লেখা গানে লিপ দিয়েছেন উত্তম কুমার থেকে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। একটা সময় চার দশক দীর্ঘ কেরিয়ারে ইতি টেনে অন্তরালে চলে যান। যোগাযোগ রাখেননি টলিপাড়ার সঙ্গে। কার্যত নিঃশব্দেই চলে গেলেন তিনি।