ত্রিপুরা
img

গার্হস্থ হিংসার জেরে আবারো পশ্চিম মহিলা থানার দ্বারস্থ গৃহবধূ

বিয়ের পর থেকেই শ্বশুরবাড়িতে নির্যাতনের শিকার হয়ে বিচার চাইতে পশ্চিম মহিলা থানার দ্বারস্থ হলেন  গৃহবধূ উমাশ্রী বণিক। তিনি স্বামী সহ শশুর শাশুড়ি দেবর প্রত্যেকের নামেই লিখিত অভিযোগ করলেন পশ্চিম মহিলা থানায়। তার অভিযোগ শনিবার রাতেও রামনগর কের চৌমুহনী এলাকায় শ্বশুর বাড়িতে তাকে প্রচন্ড মারধোর করা হয়েছে। এমনকি কাছে রাখা মোবাইলটি কেড়ে নিতে শ্বশুর তার শ্লীলতাহানিও করার চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ জানালেন এই গৃহবধূ। 
 আজ থেকে গত এক বছর তিন মাস আগে রাজধানীর রামনগরের এলাকার বাসিন্দা আবীর লাল বর্ধনের  সাথে এয়ারপোর্ট এলাকার বাসিন্দা  উমাশ্রী বণিকের সামাজিকভাবে বিয়ে হয় । নির্যাতিতা গৃহবধূ উমাশ্রী বনিক জানান, বিয়ের কয়েক মাসের পর থেকেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের সাথে তার সাংসারিক ঝামেলা শুরু হয় এবং গৃহবধূর স্বামী শ্বশুর শাশুড়ি ও স্বামীর ছোট ভাই বিগত এক বছর ধরে তার উপর নির্যাতন চালিয়ে আসছে। শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতনই শুধু নয় স্বামী শ্বশুর এবং শাশুড়ি প্রায় সময়ই তাকে বাপের বাড়ি থেকে নগদ টাকা এনে দেওয়ার জন্য চাপ দিত বলে উমাশ্রীর দাবি। উমাশ্রী বণিকের আরো অভিযোগ তার স্বামী আবীর
বিভিন্ন সময়ে তার কাছে টাকা চাইতো। মাঝেমধ্যেই সে নিজের বাপের বাড়ি থেকে টাকা এনেও দিয়েছে স্বামীর হাতে। কিন্তু তাদের টাকার খাই ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছিল। তার কাছে কেন টাকা চাওয়া হচ্ছে তা জানতে চাইলে স্বামী তাকে মারধর করতে বলে অভিযোগ উমাশ্রীর। নির্যাতিতা উমাশ্রী আরো জানান, পরে খোঁজখবর করে তিনি জানতে পারেন আবীর তার কাছ থেকে টাকা নিয়ে তার ছোট ভাইয়ের নেশার খরচ যোগাতো।উমাশ্রীর কথায়,আবীরের ছোট ভাই নাকি সব ধরনের নেশায় আসক্ত। এমনকি সে বাড়িতেও নেশাখোর বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে নেশার আসর বসাতো। এ নিয়ে প্রতিবাদ সহ আবীরের ছোট ভাইয়ের নেশার খরচ সে যোগাতে পারবে না জানিয়ে দিলে, শ্বশুর শাশুড়ি, দেবর স্বামী সবাই মিলে তার উপর শারীরিক নির্যাতন চালাত  বলে উমাশ্রী'র দাবি। শনিবার রাতেও এরকম অত্যাচারের শিকার হয় গৃহবধূ উমাশ্রী বনিক। তার বক্তব্য, শনিবার রাতে তার উপর যে নির্যাতন হয়েছে তা আর সহ্য করার মত ছিল না। এমনকি শ্বশুর বিশ্বজিৎ বর্ধন শনিবার রাতে তার মোবাইলটি কেড়ে নিতে এসে তার শ্লীলতাহানিরও চেষ্টা করে বলে গৃহবধুর দাবি। উমাশ্রী আরও অভিযোগ করেন, শাশুড়ি বিষ্ণুপ্রিয়া বর্ধন প্রায় সময় তাকে নির্যাতন করার পাশাপাশি তার গর্ভস্থ সন্তানও লাথি মেরে নষ্ট করে দিয়েছে। তাছাড়া শ্বশুর বিশ্বজিৎ বর্ধন নিজেকে স্থানীয় ব্লাড মাউথ ক্লাবের ক্যাশিয়ার বলে দাবি করে  তার উপর যে অত্যাচার হয় সেই বিষয়টি প্রকাশ করলে তাকে খুন করারও হুমকি দিয়েছে বলে উমাশ্রী'র দাবি। ইদানিং তার ওপর অত্যাচার বেড়ে যাওয়ায় এবং শনিবার এই অত্যাচারের মাত্রা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়াতেই শেষ পর্যন্ত ধৈর্য্য হারিয়ে রবিবার সকালে তিনি পশ্চিম মহিলা থানায় অভিযোগ করার জন্য ছুটে এসেছেন।  সংবাদ মাধ্যমের সামনে তার ওপর ঘটে যাওয়া নির্যাতনের   ঘটনা তুলে ধরে তিনি অভিযুক্ত প্রত্যেকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন এদিন।