
মুখ্যমন্ত্রী ডক্টর মানিক সাহার মুখ্যমন্ত্রীত্বের তিন বছর পূর্তি হলো বৃহস্পতিবার। ইতিমধ্যেই রাজ্যের উন্নয়নের জন্য মুখ্যমন্ত্রী ডক্টর মানিক সাহা কেন্দ্রীয় ও রাজ্য প্রকল্পে রাজ্যের উন্নয়নের জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ বাস্তবায়িত করেছেন। রাজ্যের বেকারদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যেও একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছেন তিনি। সৎ পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তি নিয়ে রাত দিন কাজ করছেন মুখ্যমন্ত্রী ডক্টর মানিক সাহা। স্বাভাবিকভাবেই মানুষের প্রত্যাশা বাড়ছে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। তুমি আগামী দিনে আরো উন্নয়নমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন এমনটাই আশা রাজ্যের বসিয়েছেন।
গত ২০২২ সালে ১৪ মে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে বিপ্লব কুমার দেব সরে দাঁড়ানোর পর,১৫ মে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন,তৎকালীন প্রদেশ বিজেপি সভাপতি তথা রাজ্যসভার সদ্য সাংসদ ডা.মানিক সাহা।তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আকস্মিক ভাবে দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র এক মাস আগে রাজ্যের একমাত্র রাজ্য সভার সদস্য হিসেবে নির্বাচিত,রাজ্য সভার একটি অধিবেশনে যোগ দান করেন।রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর,দলের প্রদেশ সভাপতি তথা রাজ্য সভার সদ্য নির্বাচিত সাংসদকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পদে বসানো হয়,সেসময়ে রাজ্যে শাসকের ঘরে বিদ্রোহ চলছিল।এরপর এমন জটিল পরিস্থিতিতে ভাজপা ছাড়েন দুই বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন ও আশিস কুমার সাহা। আশিস কুমার সাহা বড়দোয়ালি কেন্দ্রের বিধায়ক ছিলেন।নিয়ম অনুসারে ছয় মাসের মধ্যে জনভোটে নির্বাচিত হয়ে বিধানসভার সদস্য হতে হবে।ডা. মানিক সাহাকে বড়দোয়ালি কেন্দ্রে প্রার্থী করা হয়।তিনি বিজয়ী হয়েছেন।এরপর বছর খানেক সময়ের ব্যবধানে রাজ্যে ২০২৩ সালে বিধানসভা নির্বাচন হয়।সে নির্বাচনেও জয়ী হয়েছেন ডা. মানিক সাহা।সেবার দল দ্বিতীয় বারের মত ক্ষমতায় আসার পর মুখ্যমন্ত্রীর পদে থেকে যান ডা. সাহা। বৃহস্পতিবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পদে তিন বছর পূর্তি হয়ে ডা.সাহার।দুই দফা মিলিয়ে তিন জন মুখ্যমন্ত্রীত্ব পূর্ণ হওয়াতে তিনি সংবর্ধনায় ভাসছেন,অভিনন্দনের জোয়ারের ভাসছেন।রাজনৈতিক মহলের মতে,ডা সাহার সময়ে সুশাসন কায়েম হয়েছে,কর্মসংস্থানের জোয়ারেও বিগত সময়ের চেয়ে এই তিন বছর অনেক এগিয়ে।তবে মুখ্যমন্ত্রীকে ঘুমে রেখে অনেক কিছু রাজ্যে ঘটে চলছে এটাও ঘটনা।নেশার লাগাম টানা যায়নি।দলের কতিপয় গোষ্ঠী নানাভাবে অস্থির পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাইছে এটাও ঘটনা।তারপরও রাজ্যের সাধারণ মানুষের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা কে নিয়ে অন্যরকম ভাবনা রয়েছে।দলের সাংগঠনিক শক্তি এখনো তেমন ভাবে বৃদ্ধি হয়নি এটাও ঘটনাও।
ডা.মানিক সাহা অতীতে পুরদস্ত রাজনেতিক ব্যাক্তি ছিলেন না। জীবনের বেশিরভাগ সময় কেটেছে মানুষের সাথেই ডাক্তারি পেশাতে,স্বচ্ছ ভাবমূর্তি সম্পন্ন ডা.সাহার আলাদা ইমেজ রয়েছে জনমানসে।তিনি যে সময়ে,রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসেন সেই সময়ে রাজ্যে বিজেপির উপর মানুষের বিশ্বাস প্রায় উঠে যাচ্ছিলো। সেই জায়গা থেকে একটা সুস্থির জায়গায় পৌঁছে দিয়েছেন দল ও সরকার কে তিনি।এখনো সরকারের উপর ভিত্তি করে দলের সংগঠন চলছে।দলের সাংগঠনিক নেতারা দলকে সাংগঠনিক ভাবে শক্তপোক্ত অবস্থানে নিতে ব্যর্থ।ডা. সাহার ভদ্র, মার্জিত, ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন ও প্রশাসনিক দক্ষতায় নজর কেড়ে নিয়েছে জনমনে।রাজনৈতিক মহলের মতে,তিনি যদি দলের যোগ্য নেতৃত্ব ও দলের সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধিতে সহযোগিতা পেয়ে থাকেন তাহলে,এই রাজ্যে দল দীর্ঘ মেয়াদি শক্তি সঞ্চার করতে পারবে।তাঁর তিন বছরের মেয়াদকালে জনমানসে চাওয়া পাওয়ার বহু প্রত্যাশা বাকি থাকলেও,রাজনৈতিক মহলের মতে,সরকারের পাশাপাশি সাংগঠানিক ভাবে তাঁর যোগ সহযোগী থাকলে দলের অবস্থান অন্য পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছাবে।বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের সাথে বৃহস্পতিবার কথা বলে এমনই আভাস পাওয়া গেছে।
শিক্ষা স্বাস্থ্য এমন গুরুত্বপূর্ণ দফতরে এখনো অনেক সমস্যা রয়েছে।তেমনি সাংগঠনিক ক্ষেত্রে দলের আদিরা রয়েছে বঞ্চনার তালিকায় সেদিকে,মুখ্যমন্ত্রীকে নজর দিলে আগামী দিনে দল ও সংগঠনের পথ অনেকটাই সুগম হবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।