
নিজস্ব প্রতিনিধি:- সারাদিন পরিশ্রম করার পর এবং বাজার সেরে ফেরার পথে রোজ এক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। রাস্তার একপাশে বসে থাকে ডাবওয়ালা এবং অপরদিকে বসে থাকে ঠেলাগাড়ি করে আখের রস বিক্রেতারা। প্রখর রোদ মাথায় নিয়ে শরীর ক্লান্ত লাগে , দিনের শেষে অনেকেই ডাব কিনে ডাবের জল খেয়ে থাকে। আবার অনেকে আখের রস বিক্রেতাদের কাছ থেকে আখের রস খেয়ে থাকেন। তবে মানুষের মনে হাজারটা প্রশ্ন রয়েছে !আখের রস মিষ্টি রোজ খেলে রক্তের শর্করা বেড়ে যেতে পারে, আবার অনেকে বলছে আগে রস খেলে নাকি সুগার হয়ে থাকে। অন্যদিকে তাকালে আবার অনেকেরই ধারণা থাকে যে মেশিনে আকপেশা হয় সেটির পরিছন্নতা নিয়েও।কিন্তু প্রচলিত ধারণায় সত্যি বৈজ্ঞানিক কোনো ভিত্তি আছে কি তা খুটিয়ে দেখা হয়নি!পুষ্টিবিদরা বলছেন -আখের রসে রয়েছে ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম ,কপার, ম্যাঙ্গানিজ ,পটাশিয়াম, বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন এবং সহজ পাচ ফাইবার। এই পানিয়র মধ্যে রয়েছে প্রাকৃতিক শর্করা। যা ক্লান্ত শরীরের তৎক্ষণাৎ চনমনে ভাব এনে দিতে পারে। বিশেষ করে যারা শরীর চর্চা করেন, তাদের জন্য আখের রস বিশেষ প্রয়োজন। ২৫০ মিলিমিটার আখের রসে কেলোরির পরিমাণ ১৮৩। শর্করার পরিমাণ প্রায় ৫০ গ্রাম।এত গুণ থাকা সত্ত্বেও রোজ আখের রস খাওয়া যায় না। যাঁদের রক্তে শর্করা বাড়তির দিকে তাঁরা তো বটেই, সঙ্গে যাঁদের স্থূলত্ব সংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে বা রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের সমস্যা রয়েছে, তাঁদেরও নিয়মিত আখের রস খেতে বারণ করা হয়। অন্তঃসত্ত্বা মহিলাদেরও চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া আখের রস না খাওয়াই ভাল। শরীরে ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্য নষ্ট হলে কিংবা শরীরে জলের ঘাটতি দেখা দিলে চিকিৎসক থেকে পুষ্টিবিদ, সকলেই ডাবের জল খাওয়ার পরামর্শ দেন। ডায়েরিয়া, হিট স্ট্রোক, অতিরিক্ত ক্লান্তি কিংবা দুর্বলতা কাটাতে এই পানীয়ের জুড়ি মেলা ভার। পুষ্টিবিদেরা বলছেন, ২৫০ মিলিলিটার ডাবের জলে ক্যালোরির পরিমাণ মাত্র ৪৬। প্রাকৃতিক শর্করা রয়েছে ১০ গ্রামের মতো। তাই শক্তির জোগান বা এনার্জি দেওয়ার ক্ষেত্রে ডাবের জলের চেয়ে আখের রস ভাল।তবে, ডাবের জলে যে হেতু পটাশিয়ামের পরিমাণ বেশি, তাই যাঁদের রক্তচাপ এমনিতেই কম তাঁদের এই পানীয় বেশি না খাওয়াই ভাল। কিডনির সমস্যা থাকলেও ডাবের জল বেশি খাওয়া যায় না। ডায়াবিটিস রোগীরাও যে রোজ নিশ্চিন্তে এই পানীয় খেতে পারেন, তেমন আশ্বাস পুষ্টিবিদেরাও দেন না। পাশাপাশি, এটাও মাথায় রাখতে হবে যে, ডাবের জল বা আখের রস কিন্তু সাধারণ জলের বিকল্প হতে পারে না। সারা দিনে অন্তত পক্ষে ৭ থেকে ১০ গ্লাস জল খাওয়ার পর, শারীরিক অবস্থা বুঝে পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়ে পানীয় খেতে পারেন।