
ত্রিপুরা রাজ্যের কৈলাসহরে অবস্থিত রামকৃষ্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যা প্রায় ৭৫ বছর ধরে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে আসছে, দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যালয়টি পরিকাঠামোগত সংকটে ভুগছিল। বিদ্যালয়ের পুরনো ভবনটির বেহাল দশা শিক্ষার্থীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছিল, এবং ভবনের ছাদ থেকে প্লাস্টার খসে পড়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। এমন পরিস্থিতিতে, রাজ্য সরকারের উদ্যোগে বিদ্যালয়টির আধুনিকীকরণের জন্য ৮ কোটি ৫১ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
রাজ্য সরকারের অর্থায়নে নতুন বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে, যা ৪৫০ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন ভবনটি বর্তমান বিদ্যালয় ভবনের পূর্ব পাশে নির্মিত হবে, যাতে বিদ্যালয়ের সামনের মাঠ আরও প্রসারিত হয় এবং শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার পাশাপাশি ক্রীড়া ও অন্যান্য কার্যক্রমের জন্য পর্যাপ্ত জায়গা পায়।এই প্রকল্পের অধীনে আধুনিক শিক্ষার প্রয়োজনীয় সব সুযোগ-সুবিধা যুক্ত করা হচ্ছে, যা শিক্ষার্থীদের একটি নিরাপদ ও মানসম্মত শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করবে। বিদ্যালয়ের পরিকাঠামোগত উন্নয়ন শিক্ষার মানোন্নয়নে প্রত্যক্ষভাবে ভূমিকা রাখবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
এই বিদ্যালয়ের পরিকাঠামো উন্নয়নের বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে আলোচনা চললেও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। কিন্তু বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অসীম চক্রবর্তী বিষয়টি গুরুত্বসহকারে রাজ্যের মন্ত্রী টিংকু রায়ের কাছে উপস্থাপন করলে তিনি দ্রুত ব্যবস্থা নেন। মন্ত্রী টিংকু রায় রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডঃ মানিক সাহার কাছে বিষয়টি তুলে ধরেন, যার ফলে দ্রুত বাজেট বরাদ্দ করা হয় এবং নির্মাণকাজ শুরু হয় কৈলাসহরের রামকৃষ্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য নতুন ভবন নির্মাণের প্রকল্পটি রাজ্য সরকারের শিক্ষানীতি ও পরিকাঠামোগত উন্নয়নের বৃহত্তর পরিকল্পনারই অংশ। ত্রিপুরা সরকার শিক্ষার মানোন্নয়নে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য—সরকারি বিদ্যালয়গুলির আধুনিকীকরণ, পরিকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি ডিজিটাল শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি করা। শিক্ষার গুণগত মান বাড়াতে শিক্ষকদের দক্ষতা উন্নয়নের ওপর জোর দেওয়া। প্রতিটি শিক্ষার্থী যেন নিরাপদ ও অনুকূল পরিবেশে শিক্ষালাভ করতে পারে তা নিশ্চিত করা।নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হওয়ায় স্থানীয় জনগণ ও অভিভাবকদের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়েছে। জেলা শিক্ষা অধিকর্তা প্রশান্ত কিলিকদার জানান, "নতুন ভবন নির্মাণের ফলে শিক্ষার্থীরা আরও উন্নত পরিবেশে পড়াশোনা করতে পারবে এবং বিদ্যালয়ের পরিকাঠামোগত দুর্বলতাগুলি দূর হবে।"কৈলাসহর পুর পরিষদের চেয়ারপারসন চপলা দেব রায়ও এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, "অনেকদিন ধরেই এই বিদ্যালয়ের সংস্কারের প্রয়োজন ছিল। রাজ্য সরকারের সক্রিয় হস্তক্ষেপের ফলে অবশেষে সেই প্রত্যাশা পূরণ হচ্ছে।"