ত্রিপুরা খবর
img

রেডিয়েন্ট কোম্পানির আবাসনে ফ্ল্যাট না কিনতে আবেদন ক্ষতিগ্রস্তদের

নিজস্ব প্রতিনিধি:- রাজ্যে প্রোমোটিংয়ের ব্যবসা জাঁকিয়ে  বসেছে। এতে একাংশ নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত অংশের নাগরিকরা কিছুটা কম খরচে মাথা গোঁজার  ব্যবস্থা করতে পারছেন এটা অবশ্যই স্বীকার করতে হয়। এই রাজ্যে প্রমোটিংয়ের ব্যবসা লাভজনক হয়ে ওঠায় বহিঃরাজ্যের বেশ কয়েকটি নামিদামি কোম্পানিও ইতিমধ্যেই আগরতলা শহরকে কেন্দ্র করে বড় বড় কনস্ট্রাকশন করছে। এই ধরনের কন্সট্রাকশন কোম্পানিগুলির মধ্যে অন্যতম রেডিয়ান্ট হাইরাইস প্রাইভেট লিমিটেড। আগরতলা শহরের বুকে এই কোম্পানিটি বেশ কিছু বড় বিল্ডিং নির্মাণ করেছে। মূলত বহিঃরাজ্যের শ্রমিক নিয়ে এসে কোম্পানি  কনস্ট্রাকশন গুলো করছে। এই কোম্পানির ম্যানেজমেন্টেও রয়েছে বহিঃরাজ্যের লোকজন। জানা গেছে রেডিয়েন্ট হাইরাইজ প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির মালিকও পশ্চিমবঙ্গ নিবাসী। এই কনস্ট্রাকশন কোম্পানিটির নির্মাণ কাজ নিয়ে কোন ধরনের কমপ্লেন না থাকলেও কোম্পানিতে যারা ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বে রয়েছেন তাদের অনেকেই  দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন বলে খবর। সম্প্রতি এই রেডিয়েন্ট হাইরাইস প্রাইভেট লিমিটেড একটি বহুতল আবাসন তৈরি করছে রামনগর ২ নং রোডের শেষ মাথায়। বহুতল বিল্ডিং নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ হয়ে গেছে। বেশ কিছু ফ্ল্যাট বুকিং হয়ে গেছে বলে খবর। আর এই বহুতল বিল্ডিংটির নির্মাণ কাজ দেখাশোনার দায়িত্ব ছিল এই কোম্পানির ম্যানেজার দেবাশীষ সরখেল। দেবাশীষ সরখেল পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার আরামবাগের বাসিন্দা। কিন্তু সে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে রামনগর এলাকার বেশ কিছু ব্যক্তির কাছ থেকে ১০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে খবর। সবাইকেই সে জানিয়েছে নির্মিত এই ফ্ল্যাট বাড়িটির ফ্ল্যাট সহ কার পার্কিংয়ের জায়গা অর্থাৎ গ্যারেজ বিক্রি করার দায়িত্ব তার ওপর। এই ধরনের প্রচার করে সে কাউকে ফ্ল্যাট পাইয়ে দেবে কাউকে বা গ্যারেজ দেবে বলে ৮-১০ জনের মধ্যে কারো কাছ থেকে ২ লাখ টাকা কারো কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা কারো কাছ থেকে আরও বেশি টাকা আদায় করেছে। কিন্তু  টাকাগুলো নিয়ে সে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল। যারা তাকে টাকা দিয়েছে তার সন্ধান পাচ্ছিল না ওই ব্যক্তিরা। তবে ২৭ নভেম্বর রাতে  চুপি চুপি দেবাশীষ সরখেল নির্মীয়মান বিল্ডিংটিতে এলে বেশ কয়েকজনের নজরে পড়ে যায় সে। সঙ্গে সঙ্গে মানুষজনের সাথে তাকে ঘিরে ধরে। গোটা এলাকায় দেবাশীষের প্রতারণার বিষয়টি জানাজানি হয়। যারা তাকে টাকা দিয়েছিল তারা তাদের টাকা ফেরত চায়। কিন্তু দেবাশীষ টাকা ফেরত দিতে পারবে না বলে সবাইকে জানিয়ে দেয়। সে জানায়,সব টাকা সে খরচ করে ফেলেছে। তার এই কথায় এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। রাতেই খবর দেওয়া হয় আগরতলা পশ্চিম থানায়। ঘটনা যাতে অন্যদিকে মোড় না নেয় তার জন্য দেবাশীষ সরখেলকে রাতে পশ্চিম থানায় আটক করে নিয়ে আসে পুলিশ। দেবাশীষ পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে সে প্রতারণার মাধ্যমে একই গ্যারেজ  আট জনের কাছে বিক্রি করেছে। তাছাড়া কয়েকজন কে সে কম টাকায় ফ্ল্যাট পাইয়ে দেবে বলেও বেশ কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। পুলিশের কাছে সে জানিয়েছে যাদের সঙ্গে সে প্রতারণা করেছে তাদের টাকা সে ফেরত দিয়ে দেবে। পুলিশের সামনে তার এই স্বীকারোক্তিতে প্রতারিতরা দেবাশীষকে চব্বিশ ঘন্টা সময় বেঁধে দিয়েছিল। এই সময়ের মধ্যে সবার টাকা ফেরত না দিলে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হবে বলে জানিয়েছিল প্রতারিতরা। কিন্তু দেবাশীষ সরখেল নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টাকা দিতে না পারায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয় এবং বর্তমানে সে জেলে রয়েছে। এদিকে রেডিয়ান্ট কোম্পানির মূল পরিচালকরা কথা দিয়েও প্রতারিতদের টাকা ফেরত না দেওয়ায়  রেডিয়ান্ট কোম্পানির নির্মীয়মান ফ্ল্যাট বাড়ির সামনের ফটকে ব্যানার লাগিয়ে দিয়েছেন এবং তারা রাজ্যবাসীর কাছে আবেদন করেছেন, কেউ যাতে এই প্রতারক কোম্পানির ফ্ল্যাট না ক্রয় করেন।