
ভারতীয় জাতীয় মজদুর কংগ্রেস ত্রিপুরা রাজ্য শাখার তরফে রবিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এই সাংবাদিক সম্মেলনে আগামী ৯ জুলাই একদিনের দেশব্যাপী সাধারণ ধর্মঘট সফল করার আহ্বান রাখেন সংগঠন নেতৃত্ব। এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় জাতীয় মজদুর কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি বিপ্লব কুমার রায় সাধারণ সভাপতি জ্যোতির্ময় ধর ,সাধারণ সম্পাদক স্বপন দে সহ অন্যান্যরা। সাংবাদিক বৈঠকের নেতৃত্ব জানিয়েছেন, বর্তমান সরকার শ্রমিক বিরোধী, জন বিরোধী এবং কর্পোরেট-মুখী নীতি গ্রহণ করেছে, যা লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবিকা বিপন্ন করছে। বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি, সরকারী প্রতিষ্ঠানের বেসরকারিকরণ, শ্রমিকদের অধিকার হরণ এবং শ্রম আইন দুর্বল করার ফলে সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত বিপদে পড়ছে। সরকারের নীতিগুলি শুধুমাত্র বড় কর্পোরেটদের মুনাফা বাড়ানোর জন্য প্রণীত হয়েছে, কিন্তু শ্রমিকদের নিরাপত্তা, স্থায়ী চাকরি এবং ন্যায্য মজুরির অধিকার ধ্বংস করে দিচ্ছে। বেতন কমছে, চাকরির নিশ্চয়তা নেই, সামাজিক সুরক্ষা দুর্বল হয়েছে এবং অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অপরদিকে, ধনীরা আরও ধনী হচ্ছে আর সাধারণ মানুষ প্রতিদিন বেঁচে থাকার জন্য লড়াই করছে। এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের স্বার্থ রক্ষার জন্য ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের ডাক দিয়ে এই ধর্মঘটের আহ্বান বলে জানান বিপ্লববাবু। মোট ১৭ দফা দাবিকে সামনে রেখে এই ধর্মঘটের আহ্বান রাখা হয়েছে।এইদাবি গুলি হল,
শ্রমিক-বিরোধী নতুন শ্রমকোড বাতিল এবং পুরনো শ্রম আইন পুনর্বহাল করা, সরকারি প্রতিষ্ঠান, রেল, ব্যাংক ও প্রতিরক্ষা খাতে বেসরকারিকরণ বন্ধ করা, সমস্ত শ্রমিকদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা, শ্রমিকদেরন্যূনতম মজুরি প্রতিমাসে ২৬,০০০ টাকা করা, চুক্তিভিত্তিক ও আউটসোর্সিং প্রথা বন্ধ করে স্থায়ী চাকরির ব্যবস্থা করা। শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার সুরক্ষিত করে সিদ্ধান্তগ্রহণে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। প্রয়োজনীয় পণ্য, জ্বালানি ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি রোধ করা। সকলের জন্য কমপক্ষে ১০,০০০ টাকা পেনশন নির্ধারণ এবং পুরনো পেনশন প্রকল্প পুনর্বহাল করা।এমজিএন রেগা প্রকল্পকে সম্প্রসারিত করে শহর এলাকায় কার্যকর করা।কৃষি শ্রমিকদের সুরক্ষা আইন জোরদার করে কৃষকদের ন্যায্যমূল্য প্রদান করা।গণতান্ত্রিক অধিকার ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার উপর আঘাত বন্ধ করা, আশা, অঙ্গনওয়াড়ি, মিড-ডে-মিল) নিয়মিতকরণ ও ন্যায্য মজুরি প্রদান করা।সরকারি শিক্ষা ও স্বাস্থ্যব্যবস্থার উন্নতি করে এই দুটি বিষয়কে সাধারণ মানুষের জন্য সহজলভ্য করা। জাতীয় মনিটাইজেশন প্রকল্প বাতিল করা এবং দেশের সম্পদ বিক্রি বন্ধ করা।নারী শ্রমিকদের জন্য সমকাজে সমবেতন নিশ্চিত করা, অভিবাসী শ্রমিকদের আইনি সুরক্ষা ও ন্যায্য মজুরি প্রদান করা, কৃষক-বিরোধী নীতি বাতিল করা ইত্যাদি।