ত্রিপুরা
img

দেশে ফের বাঙ্গালীদের আক্রমণ করা হচ্ছে : আমরা বাঙালী

বাংলাদেশের চূড়ান্ত অব্যবস্থার কারণে সে দেশের বাঙালি হিন্দুরা ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এসে আশ্রয় নিচ্ছে। এই ইস্যুকে  সামনে রেখে ভারতের বাঙালী বিদ্বেষী চক্রান্তকারীরা আবার নতুন উদ্যমে বাঙালীদের উপর আক্রমন শুরু করেছে বলে অভিযুক্ত লোক আমরা বাঙালি দলের নেতৃত্ব। শনিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে আমরা বাঙালি দলের তরফ থেকে জানানো হয়েছে,মাসাধিক কাল আগে গুজরাটে সরকারী উদ্যোগে বুলডজার চালিয়ে বাঙালী পরিবারের বাড়ীঘর, দোকানপাট ভেঙ্গে বাঙ্গালীদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অথচ তারা  পঞ্চাশ বছরেরও বেশি সময় ধরে স্থায়ীভাবে গুজরাটে থেকে ব্যবসা বাণিজ্য করে বেঁচে বর্তে ছিল।  একই ধরণের নির্যাতনের ঘটনা ঘটে পক্ষকাল আগে ওড়িষ্যা রাজ্যে কর্মরত বাঙালী পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর। শুধু গুজরাট, ওড়িষ্যাই নয়, বিগত কয়েক বছর ধরে বিহার, মহারাষ্ট্র, দিল্লীসহ দেশের সর্বত্র বিভিন্ন অজুহাতে বিদেশী, বহিরাগত, বাংলাদেশী ইত্যাদি বলে  বাঙলীদেরকে আক্রমণ করা হচ্ছে। বিভিন্ন সরকারী সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত করে সাংবিধানিক অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া হচ্ছে বাঙ্গালীদের। অসম, ত্রিপুরাসহ সমগ্র উত্তরপূর্বাঞ্চলে  বাঙালীদের অবস্থা সবচেয়ে করুণ। এখানেই শেষ নয়। উত্তর পূর্বাঞ্চলকে সম্পূর্ণ বাঙালীশূন্য করার লক্ষ্যে পঞ্চাশের দশক থেকে অসমে উগ্র অসমিয়াদের দ্বারা 'বঙ্গাল খেদা' আন্দোলন ও ৮৩ সালে নেলীর বাঙালী গণহত্যা সংঘটিত হয়। তেমনি ত্রিপুরাতে বাঙালী বিদ্বেষী 'সেংক্রাক পার্টির মাধ্যমে প্রথমে পঞ্চাশের দশকে বাঙালী হত্যা, গুমকান্ড সংঘটিত করার পর ৮০ সালে স্বাধীনোত্তর ভারতবর্ষে সবচেয়ে বড় বাঙালী গণহত্যা সংঘটিত করা হয়। অসম, ত্রিপুরা, উত্তর পূর্বাঞ্চল সহ বাঙালী নির্যাতনকারী, হত্যাকারীদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য একটাই- তা হলো এ অঞ্চলকে পুরো বাঞ্জলীশূন্য করা। কিন্তু ত্রিপুরা যেমন বাংলার অঞ্চল ও বাঙালীরা ত্রিপুরার আদি বাসিন্দা, তেমনি বর্তমান অসম রাজ্যের অর্ধেকের বেশী অংশ বাংলার অঞ্চল ও সেখানকার স্থানীয় অধিবাসী বাঙালিরা অসম রাজ্যের স্থায়ী বাসিন্দা। বাঙালীবিদ্বেষী চক্রান্তকারীরা খুন, অপহরণ, গণহত্যা সংঘটিত করার পর এখন অসম চুক্তি, টিএনভি চুক্তির মাধ্যমে ও এনআরসি আইনের ধারাকে কাজে লাগিয়ে উত্তর পূর্বাঞ্চর তথা ভারতের মাটি থেকে ভূমিপুত্র ও স্বাধীনতার রূপকার বাঙালীকে উৎখাত করার জন্যে ওঠেপড়ে লেগেছে। আর বাংলাদেশের বর্তমান ঘটনাবলীকে কেন্দ্র করে নতুন উদ্যমে তারা বাঙালীদের উপর আক্রমন সংঘটিত করার পরিকল্পনায় মেতে উঠেছে। দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো- সিপিএম, কংগ্রেস ও রাজ্যের শাসক দলের মতো পার্টিগুলি ক্ষমতা দখল তথা ভোট ব্যাংকের রাজনীতি করতে গিয়ে স্বাধীনতার বলি বাঙালীদের সমস্যাকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে চলেছে। এই অবস্থায় আমরা বাঙালী দল সৃষ্টির শুরু থেকেই বাঙালীদের অস্তিত্ব ও অধিকার রক্ষার জন্যে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আন্দোলন করে চলেছে। আমরা বাঙালী দল বাঙালী বিরোধী এ সমস্ত চক্রান্তের তীব্র বিরোধী। এক্ষেত্রে সাংবাদিকদের সামনে দলের নেতৃত্ব বেশ কিছু দাবি দাওয়া সামনে রেখেছেন। এই দাবিগুলোর মধ্যে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে,স্বাধীনতার জাতীয় প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন ও বাঙালীদেরকে উদ্বাস্তু পঞ্জাবীদের মতো পূর্ণক্ষতিপূরণ দিয়ে পুনর্বাসন দেওয়া। বাঙালী রেজিমেন্ট গঠনসহ বাংলার অঞ্চলগুলি নিয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ সামাজিক অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠন করা। ভারতের বুকে বাংলাদেশী, বিদেশী বলে বাঙালী বিতাড়নের সমস্ত উদ্যোগ বন্ধ করা। ইত্যাদি।