ত্রিপুরা
img

ধরতি আবা জনভাগীদারি অভিযান

মহাত্মা গান্ধীর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ২রা অক্টোবর ২০২৪ তারিখে ঝাড়খণ্ডের হাজারিবাগ থেকে ভারতের  প্রধানমন্ত্রী ধরতিআবা জনজাতি গ্রাম উৎকর্ষ অভিযান  চালু করেছিলেন। এটি জনজাতি অধ্যুষিত অঞ্চল গুলির উন্নয়নের লক্ষ্যে একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ। এই কর্মসূচির আওতায় ভারতের ৫৪৯ টি জেলার ২,৯১১ টি ব্লকে ৬৩,৮৪৩ টি গ্রাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, যার ফলে ৫ কোটিরও বেশি জনজাতি নাগরিক উপকৃত হবেন। এই অভিযান টি ২০২৪-২৫ থেকে ২০২৮-২৯ পর্যন্ত মোট ৫ বছর চলবে। ধরতিআবা জনজাতি গ্রাম উৎকর্ষ অভিযানের লক্ষ্য হল সামাজিক পরিকাঠামো, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং জীবিকার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ঘাটতিগুলি পূরণ করা। এই লক্ষ্যমাত্রা ভারত সরকারের ১৭টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ২৫টি কার্য্যক্রমের মাধ্যমে রূপায়িত হবে। ত্রিপুরা রাজ্যে ধরতিআবা জনজাতি গ্রাম উৎকর্ষ অভিযানের আওতায় ৮টি জেলার ৫২টি ব্লকের ৩৯২টি রাজস্ব গ্রামের অন্তর্ভুক্ত ৭৭৫ টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও ভিলেজ কমিটি উপকৃত হবে। রাজ্যের ২০ টি বিভিন্ন দপ্তরের মাধ্যমে ধরতি আবা জনজাতি গ্রাম উৎকর্ষ অভিযানের বাস্তবায়ন করা হবে। ভগবান বিরসা মুন্ডার ১৫০ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে, জনজাতি গৌরব বর্ষ উদযাপনের প্রেক্ষাপটে ত্রিপুরা সরকার, ১৫ জুন থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত রাজ্যব্যাপী  সচেতনতা এবং সুবিধা সম্পৃক্ততা অভিযান পরিচালনা করতে চলেছে, যার নাম: "ধরতি আবা জনভাগীদারি অভিযান"। গ্রাম এবং জনবসতি পর্যায়ে আয়োজিত এই শিবিরগুলির মূল উদ্দেশ্য হলো সরকারের সকল কর্মসূচি পৌঁছে দেওয়ার এবং ধরতিআবা জনজাতি গ্রাম উৎকর্ষ অভিযানের উদ্দেশ্য সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। এই শিবির গুলিতে বিভিন্ন পরিষেবা ও সুবিধা দেওয়া হচ্ছে যেমন আধার কার্ড, রেশন কার্ড, কাস্ট সার্টিফিকেট, পিআরটিসি, আয়ুষ্মান ভারত কার্ড , টিকাদান, জন ধন অ্যাকাউন্ট, কিষাণ ক্রেডিট কার্ড, বীমা, বিভিন্ন ভাতা  ইত্যাদি।১৫ জুন রাজ্যের জনজাতি কল্যাণ দপ্তরের মাননীয় মন্ত্রী  বিকাশ দেববর্মাআগরতলার প্রজ্ঞা ভবনে রাজ্য স্তরে এই অভিযানের সূচনা করবেন এছাড়াও উপস্থিত থাকবেন অন্যান্য অতিথিরা। একই দিনে রাজ্যের সব জেলা ও ব্লকে একযোগে এই অভিযান শুরু হবে। এই অভিযানের অংশ হিসেবে বিশেষ গ্রাম সভার আয়োজন করা হবে, যাতে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি হয় এবং তৃণমূল স্তরে বাস্তবায়ন নিশ্চিত হয়। এছাড়াও, ব্লক স্তরে বেনিফিসারী সংযুক্তিকরণ শিবিরের  আয়োজন করা হবে। সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কুইজ প্রতিযোগিতা, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, স্বাস্থ্য শিবির ও অন্যান্য কার্যক্রমের আয়োজন করা হবে, যাতে এই অভিযানের সম্পর্কে মানুষ আরও ভালোভাবে জানতে পারে। এই অভিযানটির লক্ষ্য হলো, ২০২৫ সালের ২ অক্টোবরে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কুইজ প্রতিযোগিতা, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, স্বাস্থ্য শিবির ও অন্যান্য কার্যক্রমের আয়োজন করা হবে, যাতে এই অভিযানের সম্পর্কে মানুষ আরও ভালোভাবে জানতে পারে।ধরতিআবা জনজাতি গ্রাম উৎকর্ষ অভিযান সূচনার পর থেকে রাজ্যের ৩৯২টি রাজস্ব গ্রামে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধিত হয়েছে, যার মধ্যে, জনজাতি কল্যাণ দপ্তর অধীনে ৫ বছরের জন্য ২৮০৯৯ কোটি টাকার অনুমোদন পাওয়া গেছে যার মধ্যে রয়েছে- ২০টি নতুন ছাত্রাবাস নির্মাণ ২টি মাল্টি পারপাস মার্কেটিং সেন্টার,  আশ্রম,সরকারি, আবাসিক বিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত ১৬টি ছাত্রাবাস সংস্কার,৯টি বনাধিকার  সেল স্থাপন, ১১৯টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র নির্মানের জন্য ১৪.২৮ কোটি অনুমোদিত হয়েছে,২৮ হেক্টর জলাশয়ে মৎস্য চাষের জন্য ২১.১২ কোটি অনুমোদিত হয়েছে,সমগ্র শিক্ষা অভিযানের আওয়তায় ১৫টি ছাত্রাবাস নির্মানের জন্য ২৪৯ কোটি অনুমোদিত হয়েছে। ৭,৬৭৭টি পরিবার ও ৫১২টি পাবলিক প্লেসে বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য ২৪২.৩৭ কোটি অনুমোদিত হয়েছে। জল জীবন মিশন এর আওতায় প্রায় ৮২ শতাংশ জনজাতি পরিবারকে নল বাহিত জলের কানেকশন দেওয়া হয়েছে এবং ৩৫টি গ্রামে ১০০ শতাংশ সংযুক্তিকরণ করা হয়েছে। পিএম জনমনের অধীনে ২৪ টি মোবাইল ইউনিট স্থাপন করা হচ্ছে। এছাড়াও যেসব গ্রামের ৫ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান নেই সেই সমস্ত গ্রামের জন্য মোবাইল মেডিকেল ইউনিট এর প্রস্তাব পাঠানো হবে। ধরতিআবা জনজাতি গ্রাম উৎকর্ষ অভিযানের অধীনে প্রদান করা বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প ও পরিষেবা গুলির সুবিধা গ্রহণের জন্য, সকল যোগ্য বেনিফিসিয়ারিদের শিবির গুলিতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করার জন্য একান্ত ভাবে আহবান জানানো হয়েছে।