ত্রিপুরা
img

বাম বিধায়কের বিরুদ্ধে যুবতিকে উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ

বাম বিধায়ক নয়ন সরকারের বিরুদ্ধে উঠলো গুরুতর অভিযোগ। মুন রিয়া দাস নামে জনৈকা যুবতী  ফেসবুক একাউন্টের মাধ্যমে তাকে বিধায়ক নয়ন সরকার কুপ্রস্তাব দিয়েছে বলে অভিযোগ করলেন।  সামাজিক মাধ্যমে বিষয়টি ভাইরাল হয়ে যায়। যদিও নয়ন সরকার তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে যুবতীকে কোয়ার্টারে ডাকা এবং গৌহাটি যাবার কুপ্রস্তাব  দিয়েছিলেন সিপিএম বিধায়ক নয়ন সরকার। মুন রিয়া দাস নামে এক যুবতীর ফেসবুক একাউন্টে এই অভিযোগ পোস্ট করা হয়। মুহূর্তে এই পোস্টটি ভাইরাল হয়ে যায়। এই পোস্টটি ট্যাগ করা হয় বিজেপির ত্রিপুরা এবং মুখ্যমন্ত্রী ডক্টর মানিক সাহাকেও। বামুটিয়ার বর্তমান বাম বিধায়কের বিরুদ্ধে জনৈকা যুবতীর এই ভয়ংকর অভিযোগ ভাইরাল হবার পরেই রীতিমতো তোলপাড় শুরু হয় বাম কর্মী সমর্থকদের মধ্যে।  বিধায়কের এই কীর্তিতে হই হই, রই রই রব শুরু হয় রাজ্যে। যদিও বাম কর্মী সমর্থকদের অধিকাংশই এই পোস্টটিকে ফেক পোস্ট  বলে দাবি করেছেন। তাদের দাবি, নয়ন সরকারকে বদনাম করতে ষড়যন্ত্রমূলকে পোস্ট করা হয়েছে। বাম কর্মী সমর্থকদের দাবি, ভদ্র সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে নয়ন সরকার বামুটিয়া এলাকায় জনপ্রিয়। তার চরিত্র হনন করার জন্য রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র হয়েছে। তাই এই ধরনের পোস্ট ভাইরাল করা হয়েছে। যদিও একাংশ অতি উৎসাহী,  নয়ন সরকারের বিরুদ্ধে এই যুবতীকে ফুঁসলানোর অভিযোগ নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় খোস গাল গল্প  চালু করার প্রবণতা নিয়েছে। তবে বিশেষ খোঁজখবর করে নয়ন সরকারের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে খুব একটা বেশি তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বাম বিধায়ক নয়ন সরকার নিজেও তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ  অস্বীকার করেছেন। এ ব্যাপারে তাকে ফোন করা হলে এশিয়ান টাইমসকে তিনি পরিষ্কার জানিয়ে দেন, অযথা তার চরিত্র হনন করার জন্য ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এই পোস্ট করা হয়েছে। এক্ষেত্রে তার বিরুদ্ধে করা পোস্টটি বিশ্লেষণ করে তিনি জানান, এই পোস্ট রাজনৈতিক উদ্দেশ্য মূলক ভাবে করা। তিনি কখনোই এই ধরনের কাজ করেননি। তাছাড়া পোস্টে তার নাম করে উল্লেখ করা রয়েছে তিনি নাকি আইজিএম-এর কোয়ার্টারে ওই যুবতীকে ডেকেছিলেন। এক্ষেত্রে বিধায়ক নয়ন সরকারের দাবি তিনি কখনোই আইজিএম কোয়ার্টারে থাকেন না। আর আইজিএমে তার কোন কোয়ার্টার নেই , তাছাড়া এভাবে কোন যুবতীকে কোয়ার্টারে ডাকার প্রশ্নই নেই। তাকে রাজনৈতিকভাবে ফাঁসানোর চেষ্টা হয়েছে। তিনি আরো বলেন,যে হোয়াটসঅ্যাপে তিনি পোস্ট করেছেন বলে যেসব মেসেজগুলি দেখা গেছে, সেই একাউন্টের নামের জায়গায় একবার দাদা আরেকবার এমএলএ দাদা হিসেবে একাউন্টটি সেভ করা।  একই একাউন্ট দুই নামে কি করে সেভ হয় সে বিষয়ে প্রশ্ন তুললেন বিধায়ক।  বদনাম করার জন্যই একাংশ চক্রান্তকারীর ষড়যন্ত্র এটা বলে উল্লেখ করলেন বিধায়ক। তার দাবি নিজের এলাকায় তিনি নিজের উদ্যোগে প্রচুর উন্নয়নমূলক কাজ করছেন। তার সামাজিক কাজগুলো বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় ফলাও করে প্রচারের আলোতে আনা হচ্ছে। তার এই সামাজসেবা মূলক কাজগুলো বন্ধ করার জন্যই চক্রান্ত চলছে। তার এই সমস্ত সামাজিক অ্যাক্টিভিটিস পছন্দ হচ্ছে না একাংশ শাসক দলীয় কর্মী সমর্থকদের। যার কারণে মিথ্যে বদনাম করার জন্য এই ফেক একাউন্টটি খুলে তার বিরুদ্ধে করা এই পোস্ট বিজেপি ত্রিপুরা এবং মুখ্যমন্ত্রী ডক্টর মানিক সাহার সামাজিক মাধ্যমে ট্যাগ করা হয়েছে। এতে ষড়যন্ত্রীদের উদ্দেশ্য সম্পূর্ণ পরিষ্কার। সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্যই এই পোস্ট। এটা এক ধরনের সাইবার অপরাধ বলে দাবি করলেন বাম বিধায়ক নয়ন সরকার। এ ব্যাপারে তিনি আইনি পদক্ষেপ নেবেন বলে এদিন জানিয়ে দিলেন।

এদিকে এই পোস্টটি ভাইরাল হবার পরেই মুন রিয়া দাস নামে যে যুবতীর ফেসবুক একাউন্ট থেকে এই পোস্ট করা হয়েছিল তা ডিলিট হয়ে গেছে। স্বাভাবিকভাবেই সচেতন নাগরিকরাও মনে করছেন কেউ উদ্দেশ্যমূলকভাবে কোন বদ মতলবে বাম বিধায়ক নয়ন সরকারকে বদনাম করার চেষ্টা করছে। তবে এর পেছনে কোন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে কিনা সেটা এখনো পরিষ্কার নয় বলেই মনে করছেন কেউ কেউ।