ত্রিপুরা
img

কেদারনাথের পাহাড়ি অঞ্চলে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ৭ জনের মৃত্যু

উত্তরাখণ্ডে কেদারনাথ তীর্থযাত্রার সময় এক মর্মান্তিক হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় সাতজন প্রাণ হারিয়েছেন। রবিবার ১৫ জুন সকালে কেদারনাথ থেকে গুপ্তকাশী যাওয়ার পথে গৌরীকুণ্ড-খার্কের দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে একটি বেসরকারি হেলিকপ্টার ভেঙে পড়ে। হেলিকপ্টারটিতে থাকা ছয়জন তীর্থযাত্রী ও এক পাইলট সকলেই নিহত হন। দুর্ঘটনার পরপরই এসডিআরএফ  ও প্রশাসনের উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযান শুরু করে এবং হেলিকপ্টারের ধ্বংসস্তূপ থেকে সকল মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকর্মীরা জানান, দুর্ঘটনার পর হেলিকপ্টারটিতে আগুন লেগে গিয়েছিল এবং তা সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়ে যায়।প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ঘন কুয়াশা ও অত্যন্ত খারাপ আবহাওয়ার কারণে পাইলট দৃশ্যমানতা হারিয়ে ফেলেন। দুর্ঘটনাটি ঘটে গৌরীমাই খার্ক নামক একটি এলাকা, যা গৌরীকুণ্ড থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার উপরের একটি দুর্গম ট্রেকিং পথের মধ্যে অবস্থিত। নিহতদের মধ্যে ছিলেন পাইলট রাজবীর সিং চৌহান, মহারাষ্ট্রের শ্রদ্ধা রাজকুমার জয়সওয়াল ও তার দুই বছরের সন্তান কাশি, গুজরাটের রাজকুমার সুরেশ জয়সওয়াল, উত্তরাখণ্ডের বিক্রম সিং রাওয়াত এবং উত্তরপ্রদেশের বিনোদ দেবী  ও তুষ্টি সিং । এই হেলিকপ্টারটি আর্যন এভিয়েশন প্রাইভেট লিমিটেড দ্বারা পরিচালিত হচ্ছিল এবং এটি সকাল ৫:৩০ নাগাদ কেদারনাথ থেকে উড়ান শুরু করেছিল। উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামী এই দুর্ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং রাজ্যের প্রধান সচিবকে একটি প্রযুক্তিগত বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন, যারা রাজ্যের বর্তমান হেলিকপ্টার পরিষেবা প্রোটোকল পর্যালোচনা করবে এবং একটি কঠোর নতুন এসওপি  প্রণয়ন করবে। এই এসওপি অনুযায়ী প্রতিটি উড়ানের আগে আবহাওয়া বিশ্লেষণ, হেলিকপ্টারের পূর্ণ প্রযুক্তিগত পরীক্ষা এবং শুধুমাত্র অভিজ্ঞ পাইলটদেরই দুর্গম হিমালয় অঞ্চলে উড়ানের অনুমতি দেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন যে দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটিও কাজ শুরু করেছে। দুর্ঘটনার পর সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে রাজ্যে রোববার ও সোমবার সব হেলিকপ্টার পরিষেবা স্থগিত রাখা হয়েছে।উল্লেখ্য, চলতি বছরের মে মাসেও উত্তরকাশীর গঙ্গোত্রী যাত্রাপথে এক হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় ছয়জনের মৃত্যু হয়েছিল। বারবার এমন প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা রাজ্যের হেলিকপ্টার পরিষেবার নিরাপত্তা ও পরিচালন ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে। এখন গোটা দেশ ও ভুক্তভোগী পরিবার অপেক্ষা করছে—এই তদন্ত এবং নতুন নিরাপত্তা ব্যবস্থা কতটা কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত হয় এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কতটা কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া যায়।