ত্রিপুরা
img

রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা ভেঙে পড়েছে : মানিক সরকার

হাসপাতালে গেলে রক্ত পাওয়া যাচ্ছে না। মুমূর্ষু রোগীর জন্য রোগীর পরিজনদেরই রক্তের ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। রক্তের চাহিদা এবং যোগানে সামঞ্জস্য রাখার জন্য সরকারের তরফ থেকে নিয়মিতভাবে সে ধরনের কোন উদ্যোগ নেই।ক্লাব, গণতান্ত্রিক সংগঠন এবং বিভিন্ন অফিসে যারা কাজকর্ম করেন তাদের উৎসাহিত করে যদি রক্তদান করার ব্যবস্থা না করা যায় তবে রক্তের সংকট মিটিয়ে ওঠা কঠিন। কিন্তু সরকারের সেই উদ্যোগ নেই।ত্রিপুরা অটো রিক্সা ওয়ার্কার ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠা দিবসকে সামনে রেখে আয়োজিত রক্তদান শিবিরে উপস্থিত থেকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার এ কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, রাজ্যের হাসপাতালগুলো ও ভালো চলছে না। হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরিষেবা অত্যন্ত নিম্নমুখী। সিনিয়র চিকিৎসকরা সরাসরি রোগীর দেখভাল  করছেন না। ইন্টার্নি চিকিৎসকরাই এখন হাসপাতালের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। কিন্তু তারাও সমস্যায় রয়েছেন। কাজের চাপে তারা ঠিকমতো ছুটি পাচ্ছেন না, খাওয়া-দাওয়া করতে পারছেন না। ফলে মানসিক চাপে তারা ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন। তাদের সমস্যার কথা কেউ শুনতে চাইছেন না। একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতির মধ্যে তারা দিন কাটাচ্ছেন। একদিকে তারা জুনিয়র ,অন্যদিকে অভিজ্ঞতা সীমাবদ্ধ। যার কারণে চিকিৎসা পরিষেবা দিতে তাদের বিভিন্ন প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। যার কারণে স্বাস্থ্যপরিষেবা নিম্নমুখী। রাজ্যের জেলা হাসপাতাল মহাকুমা হাসপাতালগুলো এই সমস্যায় ভুগছে। কিন্তু সরকারের তরফ থেকে দাবি করা হচ্ছে স্বাস্থ্য পরিষেবায় প্রভূত উন্নতি হয়েছে। বাস্তবে সেই চিত্র পরিলক্ষিত হচ্ছে না। কিন্তু সরকারের তরফে শাসক দলীয় নেতৃত্ব স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নতির সাতকাহন   মানুষের সামনে উপস্থিত করছেন। বাস্তবের সাথে সংগতিহীন এই সমস্ত বক্তব্য আরো জনবিচ্ছিন্ন করছে সরকারকে। সরকারের বিরুদ্ধে এমনিতেই মানুষের ক্ষোভ  রয়েছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের কাছে সংগতিহীন তথ্য পরিবেশন করে মানুষজনকে এখন ক্ষেপিয়ে তুলছে সরকার। অপরদিকে স্বাস্থ্য পরিষেবার প্রকৃত উন্নয়নের জন্য যথাযথভাবে ব্যবস্থা নিচ্ছে না সরকার। ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ বন্ধ হয়ে রয়েছে। হাসপাতালগুলো কর্মী সংকটে ভুগছে। প্রতিটি হাসপাতালে ডাক্তারের সংখ্যা বাড়ানো প্রয়োজন নার্সের সংখ্যা বাড়ানো প্রয়োজন। সেদিকটাতে নজর দিচ্ছে না শাসক দল। হাসপাতাল থেকে কিছু হলেও গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ প্রদান করার ব্যবস্থাও নেই রাজ্যের হাসপাতালগুলোতে। এইগুলি পরিবর্তন করা দরকার। তা না হলে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবার মান বাড়ানো কোনভাবেই সম্ভব নয়। অপর দিকে স্বাস্থ্য পরিষেবাই নয় রাজ্জের শিক্ষা ব্যবস্থা ও আক্রান্ত। রাজ্যের স্কুলগুলোতে শিক্ষক সংকট। শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসছে কিন্তু তাদের ক্লাস হচ্ছে না। এক দুটির ক্লাসের পর তাদেরকে বাড়িতে ফিরে যেতে হচ্ছে। আজকের ছেলে মেয়েরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। কিন্তু তাদেরই যদি প্রকৃত শিক্ষা না হয় তাহলে আগামী দিনের দেশাত ভবিষ্যতেও অন্ধকারে যেতে বাধ্য। আর এক্ষেত্রে শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য দুটো ক্ষেত্রই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এই দুটো ক্ষেত্রের উন্নয়নে সব থেকে বেশি গাফিলতি দেখাচ্ছে শাসকেরা। এই অবস্থার অবশ্যই পরিবর্তন হওয়া প্রয়োজন বলে দাবি করলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী  মানিক সরকার।