
ঊনকোটি জেলা সফরে গেলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তার মানিক সাহা। কুমারঘাটে সরকারীভাবে দশটি প্রকল্পের উদ্বোধন এবং পাঁচটি প্রকল্পের ভার্চুয়ালী শিলান্যাস করেন মুখ্যমন্ত্রী।
ঊনকোটি জেলার কুমারঘাটে বৃহষ্পতিবার সফর করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ডক্টর মানিক সাহা। এদিন কুমারঘাটে কিছু সরকারী প্রকল্পের উদ্বোধন এবং শিলান্যাস পর্বে যোগদেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী ছাড়া উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী শান্ত্বনা চাকমা থেকে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। সভা থেকে সরকারের সমালোচকদের কড়া হুশিয়ারী দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।পেঁচারথল এবং পাবিয়াছড়া বিধানসভা এলাকার উন্নয়নে সরকারীভাবে দশটি নতুন নির্মিত প্রকল্পের উদ্বোধন এবং পাঁচটি প্রকল্পের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে যোগ দিতেই এদিন কুমারঘাটে যান মুখ্যমন্ত্রী ডক্টর মানিক সাহা। এই উপলক্ষে কুমারঘাটের গীতাঞ্জলী কমিউনিটি হলে এদিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঊনকোটি জেলা প্রশাসন। সেখানে ভার্চুয়ালী বোতাম টিপে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলির উদ্বোধন এবং শিলান্যাস করেন মুখ্যমন্ত্রী।
আলোচনা রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন ঢালাও হারে রাজ্যের উন্নয়নে কাজ করে চলেছে বর্তমান সরকার। চলতি বছরের শুরু থেকে এখনো পর্যন্ত ৫৭৮ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ হয়েছে ত্রিপুরায়। রাজ্যের চুরাইবাড়ী থেকে সাব্রুম পর্যন্ত এই উন্নয়নের কাজ তরান্বিত হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। যার সুফল পাচ্ছেন রাজ্যের মানুষ।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সরকারী বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা রয়েছে যেসবের বিষয়ে এখনো অবগত নন রাজ্যের প্রতিটি মানুষ। ফলে অনেকসময় সরকারী সুযোগ পেতেগিয়ে বঞ্চিত হন অনেকে। তিনি বলেন প্রতিঘরে সুশাসন ব্যাপকভাবে সফল হয়েছে ত্রিপুরায়, তাই দ্বিতীয়বার এটা আবারো শুরু করা হয়েছে।
আলোচনা রাখতে গিয়ে পূর্বতন সরকারকে এদিন বিঁধলেন মানিক সাহা। তিনি বলেন, সরকারী সুবিধা পাওয়া মানুষের অধিকার। আর সেই সুবিধা পেতেগিয়ে আগে আন্দোলনের জন্য রাস্তায় নামানো হতো মানুষকে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় বসার পরথেকে সরকারী কর্মচারীদের মহার্ঘ্যভাতা থেকে সাধারন মানুষের সরকারী সুবিধা, কোন কিছুর জন্যই আর আন্দোলন করতে হয়না।
আলোচনায় মানিক সাহা যোগ করেন ত্রিপুরার উন্নয়নের কথা। তিনি বলেন সাধারন মানুষের সমর্থন থাকায় প্রতিনিয়ত এমনভাবে উন্নয়নের কাজ এগিয়ে চলছে ত্রিপুরায় ফলে রাজ্য থেকে বিজেপি সরকারকে আর কোনদিন কেউ ক্ষমতাচ্যুত করতে পারবেনা বলেও এদিন আত্মবিশ্বাসের সুরে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি এও বলেন, বিজেপির শাসনে সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর সঙ্গে সরকারের মৌ সাক্ষরের ভিত্তিতে অস্ত্র জমাদিয়ে সাধারন জীবনে ফিরেছে অনেক জঙ্গীরা। এতে ত্রিপুরা বর্তমানে সন্ত্রাসবাদমুক্ত হয়েছে বলে সভায় দাবী করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন ভাষন রাখতে গিয়ে সরকারের সমালোচকদেরকেও কড়া হুশিয়ারী দেন চিকিৎসক মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন বর্তমান সরকারকে কালিমালিপ্ত করতে অপচেষ্টা চালাচ্ছে কুচক্রীরা। আমরা সবাইকে নিয়ে চলতে চাই কিন্তু কেউ চলতে না চাইলে কিছু করার নেই। রাজ্যে কোন অশান্তি সৃষ্টি করার চেষ্টা হলে সরকার কঠোর পদক্ষেপ নেবে বলে এদিন প্রকাশ্যেই কড়া ভাষায় হুশিয়ারী দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।
এদিনের অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, রাজ্যের শিল্প ও বানিজ্য দপ্তরের মন্ত্রী তথা পেঁচারথল এলাকার বিধায়ক শান্ত্বনা চাকমা, জেলা শাসক ডক্টর তমাল মজুমদার, জেলা পুলিশ সুপার সুদাম্বিকা আর, উপজাতি কল্যান দপ্তরের সচিব কে শষিকুমার সহ অন্যান্যরা। নতুন সরকারী প্রকল্পগুলির সুবিধা আগামীদিনে সাধারন মানুষ সঠিকমতো কতটুকু পান সেটাই এখন কোটি টাকার প্রশ্ন।